(পরীক্ষামূলক সম্প্রচার)

আজ: মঙ্গলবার, ১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ২৮শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ১২ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

হক, ইনসাফ ও মানবতার প্রতীক ইমাম হোসাইন (রা.)

চট্টগ্রাম : মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) হক, ইনসাফ ও মানবতার প্রতীক বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকার দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস আল্লামা মুফতি মোহাম্মদ ওসমান গণি সালেহী।

শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের আয়োজনে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে আহলে বায়তে রাসূল (দ.) স্মরণে দশ দিনব্যাপী ৩৯তম আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের ৫ম দিন আজ শুক্রবার আল্লামা মুফতি মোহাম্মদ ওসমান গণি সালেহী বলেছেন, নবীদৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) ক্ষমতা পাওয়ার জন্য কারবালা ময়দানে ইয়াজিদের বিরুদ্ধে লড়াই করেননি। ক্ষমতায় আরোহণ তাঁর লক্ষ্য ছিল না। ক্ষমতার প্রলোভন প্রত্যাখ্যান করে দ্বীনের সুরক্ষার জন্য হাসিমুখে নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, গণমানুষের জন্য সুশাসন নিশ্চিত করতেই ইয়াজিদি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন হযরত ইমাম হোসাইন (রা.)। তিনি যদি সেদিন ইয়াজিদের সঙ্গে আপস করতেন, ক্ষমতার স্বাদ নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি সেদিকে যাননি। ইয়াজিদি দুঃশাসন রুখে দিয়ে হক ইনসাফ ন্যায়নীতি ও মানবতার প্রতীক হিসেবে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন হযরত ইমাম হোসাইন (রা.)।

আজকের মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন হাওলা দরবার শরীফের সাজ্জাদানশিন পীরে ত্বরিকত শাহসূফি সৈয়দ নঈমুল কুদ্দুস আকবরী। প্রধান অতিথি ছিলেন, সমাজসেবায় একুশে পদকপ্রাপ্ত শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও চেয়ারম্যান এবং পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সূফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, আল্লাহর ওলীদের সোহবতে ও সান্নিধ্যে থাকা আল্লাহকে পাওয়ার সহজ পথ। এক মুহূর্ত আল্লাহওয়ালাদের সান্নিধ্যে থাকা হাজার বছর লৌকিকতাবিবর্জিত ইবাদত হতে উত্তম। প্রিয় নবী (দ.), সাহাবায়ে কেরাম, আহলে বায়তে রাসূল (দ) যেপথে প্রতিষ্ঠিত আছেন তাই হচ্ছে সিরাতুল মুস্তাকিম তথা আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআত। আমরাও এপথের ওপর প্রতিষ্ঠিত। দুনিয়া আখিরাতে কল্যাণ, নাজাত ও মুক্তি চাইলে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকতে হবে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকলেই মিলবে নাজাত।

ইসলামের নামে বিভ্রান্তি সৃষ্টিতে লামাযহবি-সালাফিদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন ঢাকা দারুন নাজাত কামিল মাদ্রাসার মুহাদ্দিস আল্লামা মুফতি মোহাম্মদ ওসমান গণি সালেহী। তিনি বলেন, ইসলামের নামে জঘন্য ফিতনার জন্ম দিচ্ছে লামাযহবি-সালাফিরা। এরা ইসলামের মূলধারা থেকে বিচ্যুত ও ভ্রান্ত। তাই এদের থেকে আমাদের দূরে থেকে ঈমান আক্বিদা বাঁচাতে হবে। মাকামে মাহমুদ ও আযমতে মোস্তফা (দ.) বিষয়ে আলোচনা করেন ঢাকা নারায়ণগঞ্জের ইসলামী চিন্তাবিদ আল্লামা আব্দুল মোস্তফা আব্দুর রহিম আযহারি। মাকামে মাহমুদ ও আযমতে মোস্তফা (দ.) প্রিয় নবীর (দ.) অতুলনীয় শান মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের নিদর্শন। হাশরের ময়দানে প্রিয় নবী (দ.) গুনাহগার উম্মতের জন্য সুপারিশ করবেন, এটাই আহলে সুন্নতের আক্বিদা।

আহলে বায়তে রাসূলের (দ) শান মর্যাদা নিয়ে আলোচনা করেন জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম আল্লামা হাফেজ সৈয়দ মুহাম্মদ জালালুদ্দিন।

তিনি বলেন, আহলে বায়তে রাসূল (দ.) পূত পবিত্র মহিমান্বিত জীবনের অধিকারী। পাপ ও অপবিত্রতা তাঁদের স্পর্শ করতে পারেনি। আহলে বায়তে রাসূলের (দ.) পবিত্রতার ঘোষণা দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ পাক। তাঁদের স্মরণ এবং অনুসরণেই মিলবে নাজাত ও পরিত্রাণ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতি প্রফেসর আবুল মহসিন মুহাম্মদ ইয়াহিয়া খান, জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের খতিব আল্লামা সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দীন, সাজিনাজ গ্রুপের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম, আল্লামা মোহাম্মদ আবুল হাশেম শাহ, আল্লামা গোলাম মোস্তফা মোহাম্মদ নুরুন্নবী আলকাদেরী, আল্লামা হাফেজ আহমদুল হক, মোহাম্মদ ইদ্রিস চেয়ারম্যান, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক আহমদুল হক, সমাজ সেবক মোহাম্মদ মুসলেম উদ্দীন।

কুরআন মজিদ থেকে তেলাওয়াত করেন আন্তর্জাতিক ক্বারী শাইখ আহমাদ বিন ইউসুফ আল আজহারী। নাতে রাসুল (দ) পেশ করেন শায়ের মোহাম্মদ মহিউদ্দীন তানভীর ও ইমরান কাদেরী।

ড. আল্লামা জাফর উল্লাহর সঞ্চালনায় মাহফিলে শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের কর্মকর্তা ও সদস্যগণ, বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরাম, বিভিন্ন দরবারের সাজ্জাদনশীনগণের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক ও মাহফিলের প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মদ আলী হোসেন সোহাগ, মোহাম্মদ খোরশেদুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল হক, সিরাজুল মোস্তফা, প্রফেসর কামাল উদ্দিন আহমদ, দিলশাদ আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, জাফর আহমদ সওদাগর, আবদুল হাই মাসুম, মাওলানা আবুল হাশেম শাহ, শাহাজাদা আমানুল্লাহ আবদুল্লাহ খান, হাফেজ ছালামত উল্লাহ, এস এম সফি, ক্যাপ্টেন এনামুল হক, এএফ মোহাম্মদুর রহমান, উপাধ্যক্ষ আল্লামা আব্দুল ওয়াদুদ, মাহবুবুল আলম, মিলন মেহেদী, হাজী নুরুল আলম, হাফেজ মাওলানা আহমদুল হক, মাইনুদ্দিন মিঠু, শরফুদ্দীন জঙ্গী, অধ্যাপক অহিদুল আলম, আব্দুর রহমান প্রমুখ।

সালাত সালাম শেষে দেশ ও বিশ্ববাসীর শান্তি সমৃদ্ধি কামনায় মোনাজাত করা হয়। কাল শনিবার মাহফিলের ৬ষ্ঠ দিন থেকে মসজিদের নিচতলায় পর্দা সহকারে মহিলাদের জন্য আলোচনা শোনার ব্যবস্থা থাকবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email