পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে গতকাল। ১২ ঘণ্টা পর ভোট গণনা ও ফল প্রকাশ শুরু হয়েছে। মোট ২৬৬ আসনের মধ্যে একটিতে নির্বাচন প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় ২৬৫ আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এখন পর্যন্ত অর্ধেক সংখ্যক অর্থাৎ ১৩৯টি আসনের ফলাফল বেসরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ইমরানপন্থি স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৫৫টি আসনে এগিয়ে রয়েছে।
এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এর প্রার্থীদের পেছনে ফেলে এগিয়ে আছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা শুরু করে দেশটির নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। যদিও ভোট গণনায় অস্বাভাবিক বিলম্বের জন্য মোবাইল ফোন পরিষেবা স্থগিত করাকে দায়ী করেছে দেশটির সরকার।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার বেলা ১১টায় পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন দেশটির জাতীয় পরিষদের ২৬৫টি আসনের মধ্যে ১৩৯টি আসনের ফল বেসরকারিভাবে ঘোষণা করেছে। এই ফল অনুযায়ী, নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ (নওয়াজ) ৪৩টিতে এবং কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দলের সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৫৫টি আসনে জয়ী হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।
এছাড়া পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি ৩৫টি আসন পেয়েছে। বাকি ৬টি আসন জিতেছে ছোট দল বা দল-নিরপেক্ষ স্বতন্ত্ররা।
মূলত ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) দল হিসাবে বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি তাদের নির্বাচনী প্রতীকও ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল। আর তাই ইমরানের দলের প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
বিশ্লেষকরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, এই নির্বাচনে কোনও দলই স্পষ্ট বিজয়ী নাও হতে পারে। মূলত বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ বন্ধ হওয়ার দীর্ঘ সময় পর ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে, যা পাকিস্তানের যেকোনও নির্বাচনের জন্য বেশ অস্বাভাবিক।
পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) বিশেষ সচিব জাফর ইকবাল দাবি করেছেন, ইন্টারনেট সমস্যার কারণে ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব হয়েছে বলে । তবে এর চেয়ে বিস্তারিত আর কিছু বলেননি তিনি।
তবে সরকার দাবি করেছে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুরক্ষিত করার অংশ হিসাবে বৃহস্পতিবার নির্বাচনের আগে মোবাইল ফোন পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছিল এবং সেগুলোই এখন আংশিকভাবে চালু করা হচ্ছে।উল্লেখ্য, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) গত জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল।