চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু,চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা:হাড়কাঁপানো শীতে দিনের বেশীরভাগ সময় দেখা মিলছে না সূর্যের। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে চারপাশ। এর সাথে যোগ হয়েছে উত্তর থেকে বয়ে আসা কনকনে ঠান্ডা বাতাস। এতে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে চুয়াডাঙ্গায়। মাঘের আগেই পৌষের শেষে হাড়কাঁপানো ঠান্ডার জবুথবু এ অঞ্চলের জনজীবন। তাপমাত্রার পারদ ওঠানামা করছে অস্বাভাবিকভাবে। গত পরশু মঙ্গলবার এ জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল একবারে সে তামপাত্রা নামে ১০ ডিগ্রির ঘরে। গতকাল সারাদেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। যা ছিল ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ বৃহস্পতিবার সকাল নয়টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ১৩ ডিগ্রি। ফলে বাতাসের আদ্রতা আছে ৯৭%। এতে চারদিকে ঘন কুয়াসা আর হিমেল বাতাসের কারণে শীতের তীব্রতা বাড়ছে।
শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঘন কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমেল বাতাসে মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। কয়েক দিন ধরে দেখা মিলছে না সূর্যের। মধ্য বেলায় কিছুক্ষণের জন্য রোদের দেখা মিললেও হিমেল বাতাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উত্তাপ ছড়াতে পারছে না সূর্য। এ কারণে দিনভর শীতে জবুথবু থাকতে হচ্ছে। ঠান্ডার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগের প্রকোপ। সবচেয়ে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন শ্রমজীবী মানুষেরা।
চুয়াডাঙ্গা শহরে ইজিবাইক চালিয়ে সংসারের খরচ জোগান মাসুম হোসেন। দুপুরে শহরের বড়বাজার এলাকায় তিনি বলেন, ‘বেলা বাজে এখ সাড়ে ১১টা তাও সূর্যের দেখা নেই। ঠান্ডায় হাত মনে হছে অবশ হয়ে থাকছে। হ্যান্ডেল ঠিকমত ধরে রাখা যায় না।’
আরেক অটোরিকশাচালক আবুল কাশেম বলেন, ‘শীতের কারণে লোকজন বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না। তাই ভাড়া হচ্ছে কম। আবহাওয়া এ রকম থাকলে সংসার চালানোই দায় হবে যাবে।’
শীত অনুভূত হওয়ায় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি প্রাণীরাও চরম বিপাকে পড়েছে। গৃহপালিত ও বাণিজ্যিক খামারে পালিত গরু, ছাগল ও মুরগির রোগবালাইয়ের আশঙ্কা করছেন কৃষক ও খামারিরা। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, শীতজনিত কারণে প্রাণিকুল খাওয়া-দাওয়া কমিয়ে দেয়। নানা রকম রোগবালাই দেখা দেয়। বিশেষ করে মুরগির রানীক্ষেত, ছাগলের পিপিআর ও গরুর খুরারোগ ছড়িয়ে পড়ে। এই কর্মকর্তা দাবি করেন, চুয়াডাঙ্গা জেলায় এ বছর ব্যাপক ভ্যাকসিনেশন করায় ছাগলের পিপিআরের আশঙ্কা তেমন নেই। মুরগি ও গরুর ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক জামিনুর রহমান বলেন, চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থাকে। মূলত ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত না হওয়ায় বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে একটি শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাসও দেন তিনি।