(পরীক্ষামূলক সম্প্রচার)

আজ: মঙ্গলবার, ১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ২৮শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ১২ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

সুরক্ষা বেষ্টনী ছাড়াই চুয়াডাঙ্গায় চলছে ওভারপাসের কাজ

চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু: চুয়াডাঙ্গা শহরের রেল বাজার এলাকায় রেল ওভারপাস নির্মাণের কাজ চলছে সুরক্ষা বেষ্টনী ছাড়াই। এতে প্রায় সময়ই ঘটছে ছোট ও বড় বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা।  দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য প্রশাসন ও সড়ক বিভাগ থেকে এখনো কোন ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ চোখে পড়েনি। বর্তমানে রেল বাজার সড়কের মাঝখানে দিয়ে ওভারপাসের স্প্যান বসানোর কাজ চলছে।
জানা গেছে, গত ১২ আগস্ট শহরের রেলবাজারে রেলওয়ে ওভারপাসের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার । নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা, যানবাহন ও ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ এড়ানো, শহর এলাকায় অনাকাক্সিক্ষত যানজট হ্রাস, রেলওয়ে ক্রসিংয়ের আশপাশে যানবাহন চলাচলের ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি, সড়ক ব্যবহারকারী জনসাধারণ ও যানবাহনের কর্মঘণ্টা হ্রাস করা, প্রকল্প এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়ন সাধন এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে এই ওভারপাস নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে এই উন্নয়নের উড়াল সড়ক মানুষের মরণ ফাঁদ হয়ে দাড়িয়েছে। নির্মাণ কাজের ওই স্থানে প্রতিনিয়ত ঘটছে সব ধরনের দুর্ঘটনা। কখনো কখনো আবার গাড়ি উল্টিয়ে পড়ে যাচ্ছে গর্তের ভেতরে। এতে গাড়ির চালকসহ যাত্রীরাও আহত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এই ব্যাপারে এখনো এই ওভারপাস নির্মাণ কাজের সুরক্ষা নিশ্চিত করা জেলার প্রশাসন ও সড়ক বিভাগ এখনো উদ্যোগ নেয়নি বলে জানা গেছে। এই উড়াল সড়ক নির্মাণ কাজের শুরুর পর থেকে এই স্থানে সুরক্ষা ব্যাবস্থা নিতে হতো প্রশাসনের জানান স্থানীয়রা। রেল ওভার পাস নির্মাণের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরাও রয়েছে অসেচতন ও ঝুঁকি অবস্থায়। শ্রমিকদের পোশাক থেকে শুরু করে সবই হতে হবে নিরাপত্তাবান্ধব। বিশেষ করে মাথায় হেলমেট ও পায়ে বুটসহ পরনে ঢিলেঢালা পোশাক। কিন্তু এসব নিয়মনীতি ছাড়াই শ্রমিকেরা দিনের পর দিন কাজ করে যাচ্ছেন। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় অনেকেই বড় ধরনের দুর্ঘটনা এবং হতাহতের আশঙ্কা করেছেন।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৮ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেকের বৈঠকে ওভারপাস নির্মাণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ দরপত্র আহ্বান করে। ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড (এনডিই) নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। চলতি বছরের ১৫ জুন কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ২০২৫ সালের জুলাই মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ করার কথা। এই কাজের জন্য ৭৫ কোটি ১১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। পিসি গার্ডার টাইপের এ রেলওয়ে ওভারপাসের মোট দৈর্ঘ্য ৪১৮ দশমিক ৬৯৬ মিটার, প্রস্থ ১০ দশমিক ২৫ মিটার। উভয় প্রান্তে মোট র‌্যাম্প ৩৩০ মিটার, ১৩টি স্প্যান ও ১৪টি পিলার নির্মাণ করা হবে। ওভারপাসের মধ্য ভাগে অর্থাৎ রেললাইনের ওপর ৮ মিটার ফাঁকা রাখা হবে।
পথচারি মনজুরুল আলম মালিক লার্জ বলেন, রেল ওভার পাস নির্মাণের কাজে পাশে সড়কে অনেক ঝুঁকি তৈরি করেছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। নির্মাণ কাজের আশপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করে কাজ করলে এমন দুর্ঘটনা ঘটতো না। আবার রাতের অন্ধকারে নির্মাণ কাজের রাস্তার পাশ দিয়ে যাওয়া যায় না, কারণ সেখানে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থাও নেই।
গাড়ি চালক জুয়েল বলেন, রেল ওভারপাস নির্মাণের পাশ দিয়ে গাড়ি চালানো যায় না। রাস্তা ভালো নেই আবার রাস্তার মাঝখানে কাজ। গাড়ি চলাচলের জন্য পাশ দিয়ে ভালো রাস্তা বের করে দিত তাহলে এই সব ধরনের দুর্ঘটনাগুলো হতো না।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মুহাম্মদ মনজুরুল করিম বলেন, ‘বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো সরিয়ে নিতে ওজোপাডিকোকে (পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি লিমিটেড) বলা হয়েছে। খুঁটি সরিয়ে নিলে নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি ও সড়কের কাঁচা জায়গায় ইটের সলিং করে দেওয়া হবে। শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি নজরদারিতে আছে। ফলে এখন যে ছোট দুর্ঘটনাগুলো হচ্ছে তা আর ঘটবে না।

 

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email