বিগত ৪ঠা আগস্ট ২০২৩ ইং রিপোর্টার জাইমা ইসলাম কর্তৃক লিখিত তথাকথিত অনুসন্ধানমূলক “এস আলমের আলাদিনের চেরাগ (S Alam’s Aladin’s Lamp)” শীর্ষক একটি প্রতিবেদন “দ্য ডেইলি স্টার” পত্রিকার অনলাইন এবং প্রিন্ট উভয় সংস্করনে প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটিতে এমন কিছু অসত্য তথ্য এবং বিবৃতি তুলে ধরা হয়েছে যেখানে অভিযোগের সমর্থনে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ না দিয়ে জনাব আলম এবং তার পরিচালিত এস আলম গ্রুপ বেআইনিভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন বলে অস্পষ্ট অভিযোগ করেন।
প্রতিবেদনটি ভিত্তিহীন, বানোয়াট, চরমতম অযৌক্তিক এবং সম্পূর্ণভাবে অসত্য, যেটি প্রমাণ দ্বারা অসমর্থিত। প্রতিবেদনটি প্রাথমিকভাবে বেনামি উৎস এবং বাছাই করা তথ্যের উপর ভিত্তি করে করা হয়, যা সামগ্রিক কিংবা পরিপূর্ণ ধারনা প্রদান করে না।
প্রতিবেদনটি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ছদ্মবেশে লিখিত এবং প্রকাশিত হয়েছে এবং প্রতিবেদনটির মাধ্যমে আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে এবং ব্যক্তির এবং সত্ত্বার সাংবিধানিক অধিকার সমুন্নত না রেখে, মিডিয়া ট্রায়াল এর মুখোমুখি করার উদ্দেশ্যে, জনাব আলম এবং তার স্ত্রী এবং তাদের কোম্পানির উপর সরাসরি আক্রমন করা হয়েছে।
জনাব এস আলম এবং তার, এস আলম গ্রুপ বাংলাদেশে এবং বিদেশে সুপরিচিত। জনাব আলম এবং এস আলম গ্রুপ উভয়ই তাদের সকল ব্যবসায়িক উদ্যোগে, বৈধতা এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার সম্মতির সর্বোচ্চ মান বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
জনাব আলম একজন মূল্যবান জাতীয় সম্পদ এবং দেশের রাজস্বে কর প্রদানকারী সর্বোচ্চ অবদানকারীদের মধ্যে স্থান করে নিয়েছেন। তিনি একজন উদ্যোক্তা এবং ব্যবসায়ী নেতা হিসাবে একটি প্রশংসনীয় খ্যাতি স্থাপন করেছেন।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের এত কাছাকাছি প্রতিবেদনটি প্রকাশ প্রমাণ করে যে, এটি প্রকাশের মূল উদ্দেশ্য সরকারের মানহানি করা এবং দেশের অর্থনীতিতে মূল অবদানকারীদের অবদানকে অন্যায়ভাবে হ্রাস করা। যার ফলে একটি জাতীয় সংকট তৈরি হয় এবং দেশের আর্থিক, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, বিদ্যুৎ ও খাদ্য খাতকে অস্থিতিশীল করা হয়।
এটিও উল্লেখ্য যে, ৬ই ডিসেম্বর ২০২২-এ ডেইলি স্টার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল: “এস আলম গ্রুপের সম্পদ অনুসন্ধান (Probe S Alam Group Assets)” শিরোনামে। এই প্রতিবেদনটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) মুখ্য সচিব এবং ডিসি চট্টগ্রামকে উল্লেখ করে একটি মিথ্যা রেফারেন্স তৈরি করা হয়েছিল। পিএমওর প্রতিবাদের ফলস্বরূপ, ৭ই ডিসেম্বর ২০২২ ডেইলি স্টার দ্বারা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। এটা স্পষ্ট যে, ডেইলি স্টার মিথ্যা অভিযোগ, প্রোপাগান্ডা, সরকারী কর্তৃপক্ষ এবং পিএমওকে ভুল উদ্ধৃতি দিয়ে একটি ভুয়া গল্প তৈরি করতে চেয়েছিল। পরবর্তীতে প্রতিবেদনটি চ্যালেঞ্জ করা হলে, ডেইলি স্টার প্রত্যাহার করা এবং সংশোধন প্রকাশ করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনি।
জনাব আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগের সূত্রপাত এই বিবৃতি দিয়ে যে, জনাব আলমের বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেওয়ার কোনো নথি নেই, যেটি পাঠকদের একটি ধারনা দেয় যে, জনাব আলম অবশ্যই বাংলাদেশ থেকে অন্য দেশে অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর করেছেন।
তারপর সাইপ্রাসে নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিলের উৎস নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। বিদ্বেষপূর্ণ উদ্দেশ্য নিয়ে ডেইলি স্টার তার পাঠকদের এই উপসংহারে পৌঁছাতে চায় যে, জনাব আলম এবং তার স্ত্রী অবশ্যই সাইপ্রাসের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ থেকে অর্থ স্থানান্তর করেছেন, যা ভুল।
অন্যান্য সম্পদের বিষয়ে প্রতিবেদনটি নিজেই স্বীকার করে যে এই ক্রয়ের জন্য ঋণ নেওয়া হয়েছিল কারণ সেগুলি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে প্রতিফলিত হয়।
একজন ব্যক্তি ব্যবসা পরিচালনার জন্য আইন অনুসারে যে কোনো উপায় বেছে নেওয়ার এবং ব্যবসার সাথে সম্পর্কিত তার বুদ্ধিবৃত্তিক মালিকানার অধিকার রক্ষা করার জন্য ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার অধিকারী। ব্যবসায়িক আইন এবং ব্যবসার উপর বিভিন্ন বিধিনিষেধ এক দেশ থেকে অন্য দেশে ভিন্নতর হতে পারে। ট্যাক্স আইন বেশ কঠোর হতে পারে, এবং ব্যবসায়ীরা সেখানে ব্যবসা করার জন্য কম বা কোন ট্যাক্স নেই এমন দেশগুলিকে বেছে নিতে পারেন। এটি একটি সাধারণ জ্ঞান যে বিশ্বের বেশিরভাগ বড় কোম্পানি তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার জন্য এবং সর্বোচ্চ মুনাফার জন্য তাদের পছন্দনীয় দেশ বেছে নিতে পারে। জনাব আলম তার ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য পুরনের লক্ষ্যে উপযুক্ত উপায়ে তার কোম্পানিগুলি পরিচালনা করার প্রক্রিয়া বেছে নেওয়ার মধ্যে বেআইনি কিছু নেই।
দ্য ডেইলি স্টার গত ৬ই জুলাই এবং ২৩শে জুলাই জনাব আলমকে উদ্দেশ্য করে চিঠি লিখেছিল। ১৩ জুলাই এবং ২৭শে জুলাই জনাব আলমের পক্ষ থেকে সিনিয়র অ্যাডভোকেট জনাব আজমালুল হোসেন এগুলোর জবাব দেন। প্রতিবেদনে সরাসরিভাবে বলা হয়েছে যে, তিনি মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন কিন্তু জনাব আলমের পক্ষে করা পয়েন্টগুলি উপেক্ষা করেছেন, পয়েন্টগুলো নিম্নরুপ:
০১। ডেইলি স্টারের এই ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়ার কোন অধিকার ছিল না।
০২। জনাব আলমের মানহানির বিরুদ্ধে আইনের সুরক্ষা পাওয়ার এবং তার ব্যবসা সহ তার ব্যক্তিগত বিষয়গুলির গোপনীয়তা বজায় রাখার মৌলিক অধিকার রয়েছে।
০৩। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা অসীম নয় বরং মানহানির আইন দ্বারা স্পষ্টভাবে সীমাবদ্ধ।
পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট অথবা নিদেনপক্ষে তাহার বিরুদ্ধে করা অনুসন্ধান অথবা অভিযোগগুলি না দেখে, জনাব আলমের মন্তব্য না করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা সম্পূর্ণভাবে তার অধিকারের ভিত্তিতে করা হয়েছে। মালিকানা বাণিজ্য কৌশল সহ গোপনীয় তথ্য পরিচালনা করার উদ্যোগ নেওয়া এবং সম্পূর্ণভাবে এক্সেসযোগ্য তথ্য এর মধ্যে একটি সুক্ষ ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উপরোক্ত বিষয়গুলির পরিপ্রেক্ষিতে, এটি প্রতীয়মান হয় যে প্রতিবেদনটি ইচ্ছাকৃতভাবে, বিষয়গত ব্যাখ্যা, সন্দেহজনক প্রশ্নবিধ বৈধতার উৎস থেকে বিবৃতির উপর নির্ভর করে তৈরি করা হয়েছিল, যা যাচাই করা হয়নি এবং তথ্যগুলি গ্রহণযোগ্য প্রমাণের ভিত্তিতে নয়।