ডেস্ক রিপোর্ট: ভারি ভর্ষণের কারনে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কক্সবাজারের প্লাবিত ইউনিয়নের সংখ্যা ছিল ৩১টি৷ বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত কক্সবাজারের ৯টি উপজেলার কমপক্ষে ৬০টি ইউনিয়নের তিন লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
নয় উপজেলার মধ্যে সদর উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন, রামুর তিন ইউনিয়ন, ঈদগাঁও’র ৫ ইউনিয়ন, চকরিয়া ১৮ ইউনিয়ন, পেকুয়া ৭ ইউনিয়ন, মহেশখালীর ৫ ইউনিয়ন, কুতুবদিয়ার ৬ ইউনিয়ন, উখিয়া ৫ ইউনিয়ন ও টেকনাফের ৬ ইউনিয়ন পানিবন্দী রয়েছে।মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) জেলা প্রশাসনের জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কক্সবাজারের প্লাবিত ইউনিয়নের সংখ্যা ছিল ৩১টি; যা মঙ্গলবার এসে দাঁড়িয়েছে ৬০টি ইউনিয়ন। জেলায় সবেচেয়ে বেশি প্লাবিত এলাকা চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলা।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, লোকজন জানিয়েছেন, পাহাড়ি ঢলের প্রবেশমুখ সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন ও কাকারা ইউনিয়ন ৪-৫ ফুট পানির নিচে তলিয়ে আছে। জিদ্দাবাজার-কাকারা-মানিকপুর সড়কের কয়েকটি অংশের উপর দিয়ে মাতামুহুরী নদী থেকে উপচে আসা ঢলের পানি প্রবাহিত হওয়ায় বসতঘরগুলো পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। শুকনো খাবার ছাড়া রান্নার কোন ব্যবস্থা নেই গত দুইদিন ধরে।চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে পৌরসভার অধিকাংশ ওয়ার্ড পানির নিচে তলিয়ে গেছে। স্ব-স্ব ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা পানি যাতে দ্রুত নিচের দিকে নেমে যায়, সেজন্য কাজ করছে। এছাড়াও ৯নং ওয়ার্ডের ১নং বেড়িবাঁধটি রক্ষার জন্য বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে।
সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম ও কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন জানান, ‘আমাদের ইউনিয়নগুলো মাতামুহুরী নদীর সাথে লাগোয়া। এজন্য পাহাড় থেকে নেমে ঢলের পানি আগে আঘাত আনে এসব ইউনিয়নগুলোতে।’
দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা রেজাউল করিম জানান, বাঁকখালী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে মিঠাছড়ি ইউনিয়নের উমখালী গ্রাম , আবুবকর পাড়য় শত-শত ঘর পানি বন্ধি।
তিনি জানান, এখনো ভাঙন চলমান আছে৷ যেভাবে ভাঙতেছে পুরো মিঠাছড়ি গ্রাম পানির সাথে মিশে যাওয়ার সম্ভনা রয়েছে। তিনি প্রশাসনের কাছে দ্রুত প্রদক্ষেপ নেয়ার জন্য অনুরোধ জানান।চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেছেন, ‘বন্যাকবলিত মানুষদের নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। যেসব মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে তাদেও বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবার দেওয়া হচ্ছে।’
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান জানান, এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সদর উপজেলায় ৬০০ পরিবার, রামু ৪০০ পরিবার, ঈদগাঁও ৩০০ পরিবার, চকরিয়ায় ২ লক্ষ ১০ হাজার ১৫০ পরিবার, পেকুয়া ৫০ হাজার পরিবার, মহেশখালী ১৩০ পরিবার, কুতুবদিয়ায় ১৫২৩ পরিবার, উখিয়ায় ৪৫০ পরিবার, টেকনাফ ৬০০ পরিবার পানিবন্দী রয়েছে।প্রতিটি উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলে জানান তিনি। প্রতিটি উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা মাঠে রয়েছে। তারা বোট নিয়ে পানিবন্দি মানুষের ঘরে ঘরে যাচ্ছে এবং তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসছে।