ডেস্ক রিপোর্ট: সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসুতে এক সামরিক একাডেমিতে আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ৩০ সেনা নিহত ও আরও অনেকে আহত হয়েছে। সোমবার জালে সিয়াদ সামরিক একাডেমিতে চালানো এ হামলার দায় স্বীকার করেছে দেশটির জঙ্গি গোষ্ঠী আল শাবাব, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মেজর আব্দুল্লাহি নামে নিজের পরিচয় দেওয়া সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতে বিস্ফোরণে ৩০ জন নিহত ও আরও ৭৩ জন আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করছি আমরা।’ পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক দ্বিতীয় আরেক সামরিক কর্মকর্তাও হতাহতের একই সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন।
ক্যাপ্টেন আলি ফারাহ জানিয়েছেন, হতাহতদের নিম্ন শাবেলে অঞ্চল থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল, তারা প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য রাজধানীতে এসেছিলেন। হতাহতদের অনেককে তিনি চিনতেন বলে জানিয়েছেন। তিনি ১০ জনের মৃত্যুর কথা জানেন বলেও জানিয়েছেন। ফারাহ বলেন, ‘লাইনে দাঁড়ানো সেনাদের গণনা করা হচ্ছিল, তখনই আত্মঘাতী হামলাকারী বিস্ফোরণ ঘটায়।’
এক বিবৃতিতে আল শাবাব বলেছে, তাদের আত্মঘাতী বোমারু ৭৩ জন সেনাকে হত্যা এবং আরও ১২৪ জনকে আহত করেছে। আল কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কিত এই গোষ্ঠীটি সাধারণত হতাহতের যে সংখ্যা জানায় তা সরকারি কর্তৃপক্ষের জানানো সংখ্যা থেকে অনেক বেশি হয়। গত বছর সরকারি বাহিনী ও মিত্র মিলিশিয়া বাহিনীগুলো মিলে শুরু করা সামরিক অভিযানের মাধ্যমে সোমালিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল এলাকা থেকে আল শাবাব জঙ্গিদের হটিয়ে দেয়। সামরিক অভিযানের কারণে বিভিন্ন এলাকা জঙ্গিদের হাতছাড়া হলেও তারা প্রাণঘাতী হামলা চালানো অব্যাহত রেখেছে।
সম্প্রতি সেনাবাহিনী অভিযানের দ্বিতীয় পর্বের জন্য প্রস্তুত হতে থাকায় তাদের তৎপরতায় কিছুটা ভাটা পড়ে, আর এই সুযোগে আল শাবাবের জঙ্গিরা হামলা আরও জোরদার করে। মে মাসের শেষ দিকে তারা মোগাদিসুর দক্ষিণে একে সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে উগান্ডার অন্তত ৫৪ জন শান্তিরক্ষীকে হত্যা করে। সোমালিয়ার বড় শহরগুলোর অন্যতম বাইদোয়া প্রায় দুই সপ্তাহের মতো অবরোধ করে রাখে তারা। আর চলতি মাসে তারা মোগাদিসুতে একের পর এক হামলা চালাচ্ছে।
সোমালিয়ার পশ্চিমাপন্থি কেন্দ্রীয় সরকারকে উৎখাত করে দেশে নিজেদের ধারার কঠোর ইসলামি শরিয়া আইন চালু করতে চায় আল শাবাব। এ লক্ষ্যে গোষ্ঠীটির যোদ্ধারা ২০০৬ সাল থেকে সরকারি বাহিনীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে।