(পরীক্ষামূলক সম্প্রচার)

আজ: সোমবার, ১৪ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ১১ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

চাল রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা

ডেস্ক রিপোর্ট: বাসমতি ছাড়া সবধরনের চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারত। দেশের অভ্যন্তরে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ব্যবসা-বাণিজ্যভিত্তিক প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, এল নিনো আবহাওয়ার প্রভাবে চলতি বছর ভারতে ধান উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এতে চালের দাম বেড়ে গেছে। মূলত তাতে লাগাম টানতে রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে দেশটির সরকার।
বিশ্বের শীর্ষ চাল রপ্তানিকারক ভারত। খাদ্যপণ্যটির বৈশ্বিক বাণিজ্যের ৪০ শতাংশেরও বেশি সম্পন্ন করে দেশটি। গোটা বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহৎ উৎপাদকও ভারত। প্রথম স্থানে রয়েছে চীন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইতোমধ্যে বিশ্বজুড়ে চালের দাম বেড়েছে। ভারত রপ্তানি নিষিদ্ধ করায় ভোগ্যপণ্যটির দর আরও বৃদ্ধি পাবে। গত ১০ বছরের মধ্যে তা সর্বোচ্চে উঠবে।
ট্রেড ক্রেডিট ইন্সুরের কোফেসের আসিয়ান ইকোনমিস্ট ইভে বারে বলেন, গত সেপ্টেম্বরে ভাঙা চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত। ভাত প্রধান (মূখ্য খাবার) বিশ্বের প্রায় অর্ধেকের বেশি দেশে খাদ্যপণ্যটি সরবরাহ করে তারা। এবার দেশটি সবধরনের চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করায় আন্তর্জাতিক বাজারে জোগান ব্যাপক কমবে।
তিনি বলেন, এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ ও নেপাল। কারণ, ভারত থেকেই নিজেদের চাহিদার সর্বোচ্চ চাল আমদানি করে প্রতিবেশী এ দুই দেশ।
ইভে বারে বলেন, ভারত চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করায় বিশ্বব্যাপী সরবরাহ হ্রাস পাবে। পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে চালের বাজারে অস্থিরতার সৃষ্টি হবে। আগামীতে নানা ধরনের জল্পনা-কল্পনা দাম বৃদ্ধিকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।
নিজেদের প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে কৃষি বিশ্লেষণী সংস্থা গ্রো ইন্টেলিজেন্স ভবিষ্যদ্বাণী করে, ভারত নিষেধাজ্ঞা দিলে চালের ওপর অত্যধিক নির্ভরশীল দেশগুলোর খাদ্য নিরাপত্তাহীনতাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

ক্রেতাদের উদ্দেশে লেখা এক নোটে সংস্থাটির বিশ্লেষকরা জানান, ভারত থেকে অধিক হারে চাল আমদানি করে বাংলাদেশ, চীন, বেনিন ও নেপাল। আফ্রিকা মহাদেশেরও অনেক দেশ সেখান থেকে খাদ্যশস্যটি কেনে।
ডিবিএস ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ রাধিকা রাও বলেন, ভারতের নিষেধাজ্ঞায় ক্ষতিগ্রস্ত আমদানিকারকরা চাল আমদানির জন্য বিকল্প বাজার অনুসন্ধান করতে পারেন। সেক্ষেত্রে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের দিকে ঝুঁকতে পারেন তারা। কিন্তু সেখানেও খাদ্যপণ্যটির দর বাড়তি রয়েছে। ফলে বিপাকে পড়তে পারেন সংশ্লিষ্টরা।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। তাতে বিশ্বব্যাপী প্রধান খাদ্যশস্য গমের দাম অনেক বেড়ে যায়। ফলে বিকল্প হয়ে ওঠে চাল। তবে বিশ্ববাজারে এরও সরবরাহ কমায় ইতোমধ্যে দাম ১ দশকের উচ্চতায় পৌঁছেছে।
এরই মধ্যে কৃষ্ণসাগর বন্দর দিয়ে খাদ্যশস্য রপ্তানি চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেছে রাশিয়া। এতে বিশ্ববাজারে ইউক্রেন থেকে খাদ্যপণ্য সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে গমের দর আরও বেড়েছে। ফলে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক অস্থিরতার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email