(পরীক্ষামূলক সম্প্রচার)

আজ: বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ১৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট পাস

 

বৈশ্বিক মহামারি করোনা (কভিড-১৯) পরবর্তী অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক মন্দা সফলভাবে মোকাবলা করে চলমান উন্নয়ন বজায় রাখা ও উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য সামনে রেখে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট আজ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আ. হ. ম মুস্তফা কামাল গত ১ জুন জাতীয় সংসদে ‘উন্নয়নের অভিযাত্রায় দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা’ শ্লোগান সম্বলিত এ বাজেট পেশ করেন।
আজ বাজেট পাসের প্রক্রিয়ায় মন্ত্রীগণ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ব্যয় নির্বাহের যৌক্তিকতা তুলে ধরে মোট ৫৯টি মঞ্জুরি দাবি সংসদে উত্থাপন করেন। এই মঞ্জুরি দাবিগুলো সংসদে কণ্ঠভোটে অনুমোদিত হয়।
এসব মঞ্জুরি দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে বিরোধীদলের ১০ জন সংসদ সদস্য মোট ৫০২টি ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এর মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ খাতে ২টি মঞ্জুরী দাবিতে আনীত ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর বিরোধী দলের সদস্যরা আলোচনা করেন। পরে কণ্ঠভোটে ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো নাকচ হয়ে যায়।
ছাঁটাই প্রস্তাবে আলোচনা করেন জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম, রুস্তম আলী ফরাজী, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, রওশন আরা মান্নান, পীর ফজলুর রহমান, গণফোরামের মোক্কাবির খান এবং স্বতন্ত্র সদস্য রেজাউল করিম বাবলু।
এরপর সংসদ সদস্যরা টেবিল চাপড়িয়ে নির্দিষ্টকরণ বিল-২০২৩ পাসের মাধ্যমে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন করেন।
এর আগে গতকাল ২৫ জুন সংসদে অর্থ বিল ২০২৩ পাসের মাধ্যমে বাজেটের আর্থিক ও কর প্রস্তাব সংক্রান্ত বিধি-বিধান অনুমোদন করা হয়।
এদিকে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেটে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা।
বাজেটে মোট রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে আয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য সূত্র থেকে কর রাজস্ব ধরা হয়েছে ৭০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআর বহির্ভূত ২০ হাজার কোটি টাকা, কর ব্যতিত প্রাপ্তি ৫০ হাজার কোটি টাকা।
সামগ্রিক বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা দেখানো হয়েছে, যা জিডিপির ৫.২ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেটে ঘাটতি ছিল জিডিপির ৫.১ শতাংশ।
এ ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক ঋণ থেকে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা আহরণ করা হবে। বৈদেশিক ঋণের মধ্যে ঋণ পরিশোধ খাতে ২৪ হাজার ৭ শ’ কোটি রাখা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র ১৮ হাজার কোটি টাকা, ব্যাংক বহির্ভূত উৎস থেকে ২৩ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা সংস্থানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭.৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাজেটে সামাজিক অবকাঠামো খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ লাখ ৯১ হাজার ৯০৮ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২৫.২ শতাংশ; এর মধ্যে মানবসম্পদ খাতে (শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য খাত) বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা। ভৌত অবকাঠামো খাতে ২ লাখ ২৪ হাজার ১০৮ কোটি টাকা বা ২৯.০৪ শতাংশ; যার মধ্যে সার্বিক কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ৯৩ হাজার ৪১ কোটি; যোগাযোগ অবকাঠামো খাতে ৮৫ হাজার ১৯১ কোটি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৩৪ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা। সাধারণ সেবা খাতে ১ লাখ ৬২ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২১.০৩ শতাংশ। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি), বিভিন্ন শিল্পে আর্থিক সহায়তা, ভর্তুকি, রাষ্ট্রায়ত্ত, বাণিজ্যিক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের জন্য ব্যয় বাবদ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৭৯ হাজার ৯০১ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১০.০৫ শতাংশ; সুদ পরিশোধ বাবদ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৯৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১২.০৪ শতাংশ; নিট ঋণদান ও অন্যান্য ব্যয় খাতে ৮ হাজার ৯২২ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১.০২ শতাংশ।
বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা, যোগাযোগ অবকাঠামো, ভৌত অবকাঠামো, আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, কৃষি, মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।

—- বাসস

 

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email