ডেস্ক রিপোর্ট: প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, সারা দেশের আদালতগুলোতে মামলা জট কমাতে কাজ করছে বিচার বিভাগ। স্বল্প সময়ে স্বল্প খরচে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই এখন মূল লক্ষ্য। বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে, সেটা আর হবে না।
আজ সোমবার (২৬ জুন) দুপুরের দিকে মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে বিচার প্রার্থীদের বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, স্বাধীনতার পর অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে, অনেক বৈশিক সমস্যা মোকবিলা করে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। দেশের আর্থিক সঙ্গতি বেড়েছে। ধীরে ধীরে দেশ সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিচার বিভাগ রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান অরগান, রাষ্ট্রব্যবস্থার সঙ্গে মিল রেখে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে এই বিচার বিভাগকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। তার মধ্যে একটা হচ্ছে ন্যায়কুঞ্জ।
তিনি বলেন, আমি যখন প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিই সেদিনই প্রধানমন্ত্রীকে বলি- আমাদের বিচারালয় আছে, অবকাঠামো আছে, আইনজীবীদের বসারও জায়গা আছে, কিন্তু যারা বিচার প্রার্থী তাদের বসার জায়গা নেই, যাদের জন্য এই বিচার ব্যবস্থা। তারা আদালত প্রাঙ্গণে এসে কোথায়ও স্বস্তিতে বসবে সারাদেশে কোথাও এই ব্যবস্থা নেই। অথচ এই আদালত ভবন, বিচার প্রশাসন, আইনজীবীরা সবাই তাদের সেবায় নিয়োজিত থাকে। প্রায় ৪০ লাখ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। প্রতিদিন আদালত প্রাঙ্গণে লাখ লাখ মানুষ আসে, তারা যে একটু স্বস্তিতে বসবে সেই ব্যবস্থাটুকু নেই।
হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, আমি এ বিষয়টি উপস্থাপন করলে তখন প্রধানমন্ত্রী তার সচিবকে বলেন কেন এতদিন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ওই সময় আমাদের এই উপস্থাপনের ভিত্তিতে ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন। প্রতিটি জেলায় ৫০ লাখ টাকা করে দিলেও আমরা ন্যায়কুঞ্জ স্থাপন করতে পারবো। ন্যায়কুঞ্জে ৭০টি চেয়ার, দুটি টয়লেট এবং এক কোণে একটি দোকান থাকবে। দোকান থেকে যে আয় হবে সেটা দিয়ে এই ন্যায়কুঞ্জ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, করোনার সময় ২০২০-২০২১ সালে মামলা পরিচালনার গতি কিছুটা কমে যায়। তবে ২০২২ সাল থেকে পুনরায় মামলা পরিচালনার গতি বেড়েছে।
অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রাব্বানী, আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান, হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার (বিচার) এসকেএম তোফায়েল হাসান, মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার, জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল লতিফ, পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।