(পরীক্ষামূলক সম্প্রচার)

আজ: বুধবার, ১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ১৫ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

ভারতের মণিপুরে সহিংসতায় নিহত অন্তত ১১

ডেস্ক রিপোর্ট: ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে গত ৩ দিনের জাতিগত দাঙ্গায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। রাজধানী ইম্ফলের স্থানীয় নির্ভরযোগ্য সংবাদ পত্রগুলো অন্তত ১১ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে।

সরকারিভাবে যদিও মৃতের সংখ্যা এখনও জানানো হয়নি, তবে রাজ্যে চলমান সহিংসতায় এই প্রথম প্রাণহানির কথা স্বীকার করল রাজ্য সরকার।সেনাবাহিনী এবং কেন্দ্র-রাজ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষকে উপদ্রুত এলাকাগুলো থেকে সরিয়ে নিয়ে গেছেন বলে শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন মণিপুর রাজ্য পুলিশের মহাপরিদর্শক পি ডউঙ্গেল।এছাড়া মণিপুর থেকে এক হাজারেরও বেশি মানুষ পার্শ্ববর্তী রাজ্য আসামের কাছাড় জেলায় আশ্রয় নিয়েছেন বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন কাছাড়ের এসপি।

কারফিউ ও দেখা মাত্র গুলির নির্দেশ-

রাজধানী ইম্ফল সহ গোটা রাজ্যে বর্তমানে কারফিউ জারি করা হয়েছে এবং দেখা মাত্র গুলি করার নির্দেশ জারি রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার বৃহস্পতিবার রাতেই সেনাবাহিনী পাঠাতে শুরু করেছিল। শুক্রবার কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, সহিংসতা বন্ধে কেন্দ্র থেকে আরও ২০ কোম্পানি সেনা পাঠাচ্ছে।বাহিনী মোতায়েন এবং আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।ভারতের সংবিধানের ৩৫৫ ধারা প্রয়োগ করেই বর্তমানে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ে নিয়েছে। কোনও রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়লে কেন্দ্রীয় সরকার এই ধারা প্রয়োগ করে থাকে।৩৫৫ ধারার প্রয়োগ অনেকটা জরুরি অবস্থা জারির মতো। তবে ভারতের গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে এই ধারার প্রয়োগ খুবই বিরল।মণিপুরের সহিংসতার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কর্ণাটকে তার নির্বাচনী প্রচার বাতিল করে মণিপুরের পরিস্থিতি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই।বিরোধী কংগ্রেস বলছে, রাজ্যে বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।ভারতীয় রেল জানিয়েছে, মণিপুরে সহিংসতার প্রেক্ষিতে তারা ওই রাজ্যে কোনও ট্রেন এখনই পাঠাচ্ছে না। আর প্রতিবেশী রাজ্য আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরা এবং অরুণাচল প্রদেশ মণিপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত তাদের রাজ্যের শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে।সেনা ও আধাসামরিক বাহিনী বাহিনী ফ্ল্যাগ মার্চ করছে পুরো রাজ্যেই। স্থানীয় সাংবাদিকরা বলছেন, বৃহস্পতিবারের তুলনায় শুক্রবার অশান্তি কিছুটা কমেছে, তবে রাজধানী ইম্ফল ও সহিংসতার উৎস যে চূড়াচন্দ্রপুর, সেখানে এখনও প্রবল উত্তেজনা বিরাজ করছে।

তবে সেনাবাহিনী মোতায়েন হওয়ার আগেই দুদিন ধরে বহু বাড়িঘর, দোকান গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। লুট হয়েছে দোকান বাজার।সাত-আটটি পুলিশ থানা থেকে বন্দুক ও গুলি লুট হয়েছে। পুলিশ মহানির্দেশক শুক্রবার জানিয়েছেন, যারা এগুলো লুট করেছে, তারা যদি নিজের থেকে ফেরত দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের শাস্তি দেওয়া হবে না; কিন্তু যারা বন্দুক ফেরত দেবে না, তাদের জাতীয় সন্ত্রাস দমন কর্তৃপক্ষের তদন্তের মুখে পড়তে হবে।সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড পরিষেবা বন্ধ থাকলেও অনেক ভুয়া ভিডিও ছড়িয়ে পড়ছে, যার সঙ্গে সাম্প্রতিক সহিংসতার কোনও যোগাযোগ নেই।সহিংসতা বন্ধ করতে পদকজয়ী বক্সার মেরি কম এক ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন। খ্রিস্টান চার্চগুলোও মণিপুরে খ্রিস্টানদের ওপরে হামলা এবং চার্চগুলো রক্ষার আবেদন জানিয়েছে।

 

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email