(পরীক্ষামূলক সম্প্রচার)

আজ: বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ১৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

১১ কোটি টাকা যেভাবে ছিনতাই হয়েছিল জানাল ডিবি

রাজধানীর উত্তরা এলাকায় সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তাদেরকে গ্রেফতারের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তারা কীভাবে সেদিন টাকা ছিনতাই করেছে এবং এর আগে কি কি করা হয়েছে তার আদ্যপ্রান্ত জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে।
রোববার (১২ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সেই কথা জানিয়েছেন ডিবির প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।
গ্রেফতাররা হলেন- সানোয়ার হোসেন (২৮), ইমন ওরফে মিলন (৩৩), আকাশ মাদবর (২৫), সাগর মাদবর (২২), বদরুল আলম (৩৩), মিজানুর রহমান (২০), সনাই মিয়া (২৮) ও এনামুল হক বাদশা (২৬)।
হারুন অর রশিদ বলেন, এ ঘটনায় রাজধানী ছাড়াও সিলেট ও সুনামগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তারা কিভাবে এই টাকা ছিনতাই করেছে তা জানিয়েছে। প্রথমে সানোয়ারকে পরে ইমনকে এরপর বাকিদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রায় ১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনা এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে ডিবি।

যেভাবে ছিনতাই করা হয়েছিল
তাদেরকে জিজ্ঞাসা করে তারা জানিয়েছে, ঘটনার দিন ভোরে একটি হায়েস মাইক্রোবাস সিলেট যাওয়ার উদ্দেশে ভাড়া করা হয়েছিল। তাদের কথা মতো ঘটনার দিন ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে সেই প্রাইভেট কার চালক রাজধানীর কুর্মিটোলা এলাকার যাত্রী ছাউনির সামনে পৌঁছালে তারা তাকে পিছনের সিট ঠিক করার জন্য বলে। চালক পিছনে গেলে তারা তার হাত পা চোখ বেঁধে ফেলে সেই গাড়ির নিয়ন্ত্রণ তারা নিয়ে নেয়। এরপর তারা টাকা বহনকারী সেই গাড়িটিকে অনুসরণ করতে শুরু করে। এ ঘটনার আগে তারা বহুদিন থেকে অনুসরণ করছিল। তারা অনুসরণ করে লক্ষ্য করেছে মানি প্লান্ট লিঙ্ক এর টাকা বহন করার সময় কোন অস্ত্র থাকে না এবং নিরাপত্তাকর্মী থাকে না।
ছিনতাই এর আগে তারা সেই গাড়ির একবার সামনে যায় একবার পেছনে আসে। নির্জন এলাকায় গেলে এক পর্যায়ে তাদের সাথে ধাক্কা লাগে। এরপর তাদের একজন বলে আপনারা গাড়িতে ধাক্কা দিলেন কেন বলার সাথে সাথে সেই গাড়ির গেট খুলে যায়। শেষে তারা সেই গাড়ি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কিছু দূর যাওয়ার পর গাড়ি থেকে সুপারভাইজারকে নামিয়ে দেয়। পরে তারা টাকা গুলো নিয়ে ৩০০ ফিট এলাকার নির্জন স্থানে চলে যায়। অন্যদিকে ট্রাঙ্ক গুলো নিয়ে গাড়িগুলো চলে যায়। এরপর তারা দুইটি ট্রাঙ্ক ভেঙে তাদের সঙ্গে থাকা দুটি চাউলের বস্তা ও একটি ব্যাগ ভর্তি করে। এরপর আর কোনো জিনিস না থাকায় টাকাগুলো দেখে তারা ভয় পেয়ে ট্রাঙ্ক গুলো রেখে পালিয়ে যায়। এরপর তারা ড্রাইভারের সিটে একটি ব্যাগ ফেলে তাদের কাপড় পরিবর্তন করে চলে যায়। তবে এই কাপড় উদ্ধার করা হয়েছে। পরে গাড়ির চালক সুস্থ হয়ে সে ১ কোটি ৭ লাখ টাকার মতো তার ভাইয়ের হেফাজতে রেখে দেয়। তবে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সেই বাসা থেকে টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

হারুন বলেন, রাজধানীর বনানী এলাকা থেকে প্রথমে সানোয়ারকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উদ্ধার করা হয় ১ কোটি ১৪ লাখ ৫১ হাজার টাকা। একই এলাকা থেকে মিলন ওরফে ইমনকে পরবর্তীতে ঝড় সাহারা এলাকা থেকে চারজনকে ৩২ লাখ ৪৭ হাজার উদ্ধার করা হয়। তাছাড়া উত্তরা এলাকা থেকে আকাশ ও সাগর গ্রেফতার করা হয়। তাদের বাসা থেকে এক কোটি সাত লাখ টাকা এছাড়াও এ ঘটনার একটি প্রাইভেট কার উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অপর একটি টিম সুনামগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে বদরুল আলম, মিজানুর রহমান, সোনাই এবং এনামুল হক বাদশাকে গ্রেফতার করে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email