নিউজ ডেক্স প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়েছে ইসরাইলে। বিচার ব্যবস্থায় সংস্কার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কয়েক লাখ মানুষ দেশটির বিভিন্ন সড়কে প্রতিবাদে অংশ নেয়। সরকারি পরিকল্পনায় আদালতের ক্ষমতা খর্ব করা হবে। তবে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দাবি বিচার ব্যবস্থায় এই সংস্কারের ফলে সরকারের বিভিন্ন শাখার মধ্যে ভারসাম্য পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। উল্টো কথা বলছে বিরোধীরা। তারা বলছে, তার এই পরিকল্পনা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে আরও বলা হয়, শনিবার প্রতিবাদ বিক্ষোভে বিরোধীদের অন্যতম নেতা ইয়াইর লাপিদ বলেছেন, এটা হচ্ছে ইসরাইলের সবচেয়ে বড় সংকট। ভিন্ন এক ঘটনায় রোববার নাবলুসের পশ্চিমতীরের কাছে তিনজন ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরাইলি সেনারা। ইসরাইলি সেনাদের দাবি, এসব ব্যক্তি ইসরাইলি সশস্ত্র পোস্টের দিকে গুলি ছুড়েছিল।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। কয়েক মাস ধরে ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ভয়াবহ সহিংসতা দেখা দিয়েছে।
শনিবারের বিক্ষোভ আয়োজকরা বলছেন, তারা ইসরাইলের সড়কে সড়কে কমপক্ষে ৫ লাখ মানুষকে জমায়েত করেছেন। হাটেৎজ পত্রিকা একে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ বিক্ষোভ বলে বর্ণনা করেছে। প্রায় দুই লাখ বিক্ষোভকারী জমায়েত হন তেল আবিবে। তাদের অনেকের হাতে ছিল ইসরাইলের জাতীয় পতাকা। এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন তামির গুস্তসাব্রি নামে এক ব্যক্তি। তিনি রয়টার্সকে বলেছেন, সরকার বিচারবিভাগের যে সংস্কার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে, তা কোনো সংস্কার নয়। এটা একটা বিপ্লব। এর মধ্য দিয়ে ইসরাইলে পূর্ণাঙ্গ স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু আমার সন্তানদের জন্য একটি গণতান্ত্রিক ইসরাইল প্রত্যাশা করি আমি।
বিক্ষোভের ভিতর দিয়ে যখন পুলিশ প্রধান আমিচাই এশিদ হেঁটে যান, তখন বিক্ষোভকারীরা হাততালি দিয়ে তার প্রশংসা করেন। এর আগে নেতানিয়াহুর সরকার ডিস্ট্রিক্ট কমান্ডারকে সরিয়ে দেয়ার কথা বলে। কিন্তু দেশটির এটর্নি জেনারেলের বাধার মুখে তা পারেনি সরকার। শনিবার উত্তরের হাইফা শহরে রেকর্ড ৫০ হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। সরকারের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে এটা ছিল টানা ১০ম সপ্তাহের প্রতিবাদ বিক্ষোভ।
দক্ষিণের শহর বীর শেভাতে বক্তব্য রাখেন ইয়াইর লাপিদ। তিনি সেখানে সতর্ক করে বলেন, দেশ অপ্রত্যাশিত এক সংকটের মুখোমুখি। সন্ত্রাসের একটি ঢেউ আমাদেরকে আঘাত করছে। আমাদের অর্থনীতিকে দুমড়ে মুচড়ে দিচ্ছে। দেশ থেকে অর্থ বাইরে চলে যাচ্ছে। সৌদি আরবের সঙ্গে নতুন চুক্তি করেছে ইরান। কিন্তু এই সরকার একটি বিষয়েই তাদের মনোযোগ দিয়েছে। তা হলো ইসরাইলের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দেয়া। উল্লেখ্য, সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে তাতে নির্বাচিত সরকার আদালতের বিচারকদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারবে। নির্বাহী বিভাগের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের রায় দেয়ার ক্ষমতা সীমিত হয়ে যাবে। এই ইস্যুতে ইসরাইলের সমাজ গভীরভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। তারা বিরোধীদের সহ্য করার রীতি থেকে বেরিয়ে আসছে।