(পরীক্ষামূলক সম্প্রচার)

আজ: মঙ্গলবার, ১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ২৮শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ১২ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর রণক্ষেত্র: বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা

ডেস্ক রিপোর্ট: তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ চলছে। এতে অন্তত অর্ধশত আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও পুলিশ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের সাথে এলাকাবাসীর সংঘর্ষের জেরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আগামী দু’দিন ক্লাস ও সকল প্রকার পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।শনিবার (১১ মার্চ) রাত ১০টার পর বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের আদেশক্রমে প্রদীপ কুমার পাণ্ডে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী রোববার (১২ মার্চ) ও সোমবার (১৩ মার্চ) অনিবার্য কারণবশত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। আগামী ১৪ মার্চ মঙ্গলবার থেকে ক্লাস ও পরীক্ষাসমূহ যথারীতি চলবে।

আজ শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাসের সিটে বসা নিয়ে সুপারভাইজার ও স্থানীয়দের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। দুই ঘণ্টা পরও ক্যাম্পাসের বিনোদপুর গেটে এই সংঘর্ষ চলছে।
সংঘর্ষের একপর্যায়ে বিনোদপুর পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিনোদপুরের অনেক দোকানেও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ভাঙচুর করা হয় মোটরসাইকেলে।বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত মাথা, হাত, পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত নিয়ে অন্তত ২৫ জন শিক্ষার্থী চিকিৎসাধীন। আরও অনেকে চিকিৎসা নিতে আসছে। গুরুতর আহত ১০ শিক্ষার্থীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিনোদপুর গেটে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে ক্যাম্পাসের ভিতরে ইটপাটকেল ছুড়ছেন স্থানীয়রা। তাদের ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন অনেক শিক্ষার্থী। এর আগে বিনোদপুরে মেসে যাওয়ার পথে স্থানীয়দের আক্রমণের শিকার হন সাত-আটজন শিক্ষার্থী। এ সময় সাংবাদিকের ওপরও হামলা করেন তারা।সংঘর্ষে আহত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাপচিত্র বিভাগের ছাত্র আকাশ বলেন, ‘আমি রাস্তার ওপরে ছিলাম। হঠাৎ স্থানীয়রা আক্রমণ করেন, এলোপাতাড়ি মারতে থাকেন।’আহত আরেক ছাত্র বলেন, ‘মারামারির ঘটনা শুনে গেটের দিকে গিয়েছিলাম। তখন বাইরে থেকে ছোড়া ইটের আঘাতে আমার মাথা কেটে যায়।’

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বগুড়া থেকে মোহাম্মদ বাসে রাজশাহী আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র আলামিন আকাশ। বাসে সিটে বসাকে কেন্দ্র করে গাড়ির চালক শরিফুল ও সুপারভাইজার রিপনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় আকাশের। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটে এসে আবারও কন্ডাক্টারের সঙ্গে ঝামেলা হয়। তখন স্থানীয় এক দোকানদার এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে আসে। সেখানে স্থানীয় দোকানিদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়।একপর্যায়ে স্থানীয়রা একজোট হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও পাল্টা ধাওয়া করেন। এ সময় দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিসহ কয়েকজন সাংবাদিকের ওপরও হামলা চালায় স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালাচ্ছে। র‌্যাবও এই অভিযানে অংশ নিচ্ছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।’

 

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email