ময়মনসিংহ নগরীর কাচারিঘাট এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর সেতু না থাকায় চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন চরাঞ্চলের লাখো মানুষ। প্রতিদিন নৌকায় নদী পারাপারে অপচয় হচ্ছে কর্মঘণ্টা, গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। দুর্ভোগ নিরসনে কাচারিঘাট এলাকায় একটি সেতু নির্মাণের দাবি এ অঞ্চলের মানুষের।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদের কাচারিঘাট এলাকা দিয়ে নৌকায় ঠাসাঠাসি করে জেলা সদরে প্রতিদিন আসা-যাওয়া করেন ময়মনসিংহের চরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ। নৌকায় নদী পারাপারে তাদের দুর্দশার শেষ নেই। এ ছাড়া রোগী আনা-নেয়া ও পণ্য পরিবহনে তাদের পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। সময়মতো নৌকা না পাওয়ায় সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়েন শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবীরা।
চর ঈশ্বরদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ব্রিজ হলে আমাদের এলাকায় শিল্পায়ন হতো। এর মাধ্যমে বেকার সমস্যা দূর হতো এবং গ্রামের মানুষের জীবনমান উন্নত হতো।’
জুলফিকার আলী নামে আরেক চাকরিজীবী জানান, সেতু না থাকায় শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা সারা বছরই তাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। অনেকটা পথ হেঁটে, সাইকেলে কিংবা মোটরসাইকেলে পারাপার হতে নদ।
জেলা নাগরিক আন্দোলনের নেতা অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল বলেন, একটি অঞ্চলের উন্নয়নের নেপথ্য চালিকাশক্তি হিসেবে ধরা হয়ে থাকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিখাতের অগ্রগতিকে। শুধু একটি সেতুর অভাবে এই এলাকার বাসিন্দাদের কোনো খাতেই অগ্রগতি সম্ভব হচ্ছে না। সেতু নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন মহলে দাবি উত্থাপন করা হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ ময়মনসিংহ অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শওকত আলী জানান, প্রকল্প প্রণয়নের জন্য প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। বুয়েটের প্রকৌশলীরা সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে। সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে নকশা প্রণয়ন, অর্থছাড়, জমি অধিগ্রহণ, দরপত্র আহ্বানসহ অন্যান্য কাজ শেষ করতে আরও দুই বছর সময় লাগতে পারে।
ময়মনসিংহ মহানগরের তিনটি ওয়ার্ড ছাড়াও সদরের তিনটি ইউনিয়ন এবং ফুলপুর, তারাকান্দা ও শেরপুরের নকলা উপজেলার বিপুল সংখ্যক মানুষ এই ঘাট দিয়ে চলাচল করেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাচারিঘাটে একটি সেতু নির্মাণ হলে চরাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন সম্ভব।